এনামুল হক এনাম, জকিগঞ্জ
জকিগঞ্জ উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের ২৭টি হাট-বাজার বুধবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে ইজারা প্রদান করা হয়েছে। উক্ত ইজারা প্রদানে নানা অনিয়মের কথা উল্লেখ করে সোমবার সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
এতে উল্লেখ করা হয়, গত ১১ ফেব্রয়ারী বিকাল বেলা অতি গোপনে কোন প্রকার প্রচার-প্রচারণা ছাড়াই জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে জকিগঞ্জের বিভিন্ন হাট-বাজার ইজারা প্রদান করা হচ্ছে মর্মে আবেদনকারীরা লোকমূখে শুনিতে পান। সংবাদ পেয়ে তারা সেখানে উপস্থিত হয়ে দেখেন পূর্বপরিকল্পিতভাবে সম্পুর্ণ ভাগ-বাটোয়ারার মাধ্যমে যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই নির্ধারিত লোকদের ডেকে এনে হাট-বাজার গুলো সমজিয়ে দেয়া হচ্ছে। তারা উপস্থিত সময়ে এর প্রতিবাদ করেন। কিন্তু তাদের প্রতিবাদে কোন গুরুত্ব দেয়া হয়নি। বর্তমান ইজারাদার ও নতুন আগ্রহী অনেকেই অংশ গ্রহণ করতে চাইলে তাদেরকে সুযোগও দেয়া হয়নি। যা ঐ তারিখের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সিসি ফুটেজ চেক করলে প্রমাণ মিলবে বলেও তারা আবেদনে জানান। এছাড়া আরো উল্লেখ করেন, হাট-বাজার ইজারা সংক্রান্ত নীতিমালায় উল্লেখ রয়েছে সরকারী অফিস- আদালত, জনসমাগমের স্থানে নোটিশ টাংগিয়ে বা উক্ত বাজার সমুহে মাইকিং করে ইজারার বিষয়টি জানাতে হবে। কিন্তু জকিগঞ্জের ৯টি ইউনিয়নের ২৭টি বাজারের কোথাও এমন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে নি উপজেলা প্রশাসন। প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলেও আজ ৪ বছর থেকে জকিগঞ্জ উপজেলায় কোন ধরণের প্রিন্ট পত্রিকা আসে না। যার কারণে কোনভাবেই জকিগঞ্জের মানুষ এ দরপত্র আহবানের কোন সংবাদ পায় নি। বাস্তবতা হচ্ছে কোন ধরনের প্রচারণা ছাড়াই গোপন চুক্তির ভিত্তিতে সরকারের লক্ষ-লক্ষ টাকার রাজস্বকে ফাঁকি দিয়ে সুবিধাভোগীদের সুবিদা দেয়ার জন্য সম্পুর্ণ অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে ইজারা দেয়া হয়েছে। পূর্ব সিলেটের ঐতিহ্যবাহী বড় হাট বসে জাকিগঞ্জের কালিগঞ্জ ও শাহগলী বাজার। অত্যান্ত লাভজনক এই দুটি বাজারের ইজারা নিতে প্রতি বছর বেশ কিছু সিডিউল কিনলেও এবার ঘঠেছে এর ভিন্ন। বিগত সনে শাহগলী বাজার ৭০ লক্ষ টাকা দামে গেলেও এবার গোপনে তা ৫৬ লক্ষ ৬০ হাজার টাকায় ইজারা দেয়া হয়েছে। এখানে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা। আর কালিগঞ্জ বাজারের গত বছরের মূল্য ছিল ৫৫ লক্ষ টাকা এবার গোপনে ৪৫ লক্ষ টাকা ৯০ হাজার টাকায় ইজারা প্রদান করা হয়েছে। এখানেও সরকারের রাজস্ব হারলো প্রায় ১০ লক্ষ টাকা। মাহতাব আহমদ, আব্দুল গফুর, জামাল আহমদ, ফয়জুল ইসলাম, মো: মুছা, শাহেদুজ্জামান, আব্দুস শাকুর, আব্দুস সালাম, আবুল হোসেন, জয়নুল হক, আব্দুল খালিক, বাহারুল ইসলাম, আবুল কালাম, মো: আফ্তাব আহমদ ও ছালেহ আহমদ স্বাক্ষরিত অভিযোগে তারা বলেন, বিষয়টি প্রচার হওয়ার পর থেকে জকিগঞ্জের সর্বত্র একই আলোচনা যেখানে সরকারের লোক সরকারী রাজস্ব আদায়ের কাজ করবেন, সেখানে কীভাবে সরকারের রাজস্বকে হারিয়ে ভাগবাটোয়ারা সুযোগ করে দেয়া হয়? সম্পুর্ণ অবৈধ, অনৈতিক ও বেআইনী এ ইজারা প্রক্রিয়া বাতিল করে যথাযথ নিয়ম অনুসরণে নতুন করে ইজারা প্রদানের জন্য দরপত্র আহবান করারও দাবী জানানো হয় লিখিত আবেদনে।
Leave a Reply